অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর কব্জি কাটলো স্বামী

শেরপুরে অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর হাতের কব্জি কেটে নেয়ার মামলার প্রধান আসামি স্বামী লিটন মিয়াকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত ৮টার দিকে শেরপুর শহরের বাগরাকসা মহল্লার নতুন বাসটারমিনালের সোনার বাংলা বাস সার্ভিসের কাউন্টার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে শেরপুর সদর সার্কেল কার্যালয়ে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আমিনুল ইসলাম। পরে তাকে রিমান্ড আবেদনসহ বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন মিয়া স্ত্রীর কব্জি কাটার অভিযোগ স্বীকার করেছে। যৌতুক না দেয়ায় স্ত্রীকে অনৈতিক কাজে লাগাতে চেয়ে ছিলেন, এতে রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তিনি এ অপকর্ম করেছে বলেও জানিয়েছে। তাকে রিমান্ড আবেদনসহ বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করার কথাও জানান তিনি।

ঝিনাইগাতী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রধান আসামি কসাই লিটনের অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে অভিযান চালিয়ে ঝিনাইগাতী বাজারের কসাইপাড়া এলাকা থেকে কব্জি কাটায় ব্যবহৃত বটি-দা উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রায় নয় মাস আগে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের বাদাতেঘরিয়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার মেয়ে কুলসুম বেগমের (২০) সঙ্গে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের কসাইপাড়া এলাকার কুদরত আলী ছেলে পেশায় মাংস বিক্রেতা লিটন মিয়ার বিয়ে হয়। সম্প্রতি চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূ কলসুমের কাছে স্বামী লিটন ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় তাকে অনৈতিক কাজে যেতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এর জের ধরে গত ১৩ জুন স্বামী কসাই লিটন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুলসুমকে কুপিয়ে ডান হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে গত ৩ জুলাই কুলসুম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামী লিটন মিয়া ও তার পাঁচ ভাইসহ ৬ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।